মহান আল্লাহতালা পৃথিবীর সব জায়গা থেকেই মানুষের দোয়া শুনেন ও কবুল করেন। তবে কিছু বিশেষ স্থানে দোয়া কবুল হওয়ার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। সেজন্য সেসব স্থানে মনোযোগ সহকারে বিনম্রচিত্তে অশ্রুসিক্ত নয়নে দোয়া করার দরকার। হজ পালনকারীদের জন্য মক্কা-মদিনার সফরের দোয়া মোনাজাত করা ও জীবনের যত চাওয়া পাওয়া আছে, সবকিছু আল্লাহর কাছে তুলে ধরার একটি সুবর্ণ সুযোগ।
কিছু বিশেষ স্থানে দোয়া কবুল
কারণ মক্কা-মদিনার মাটিতে হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীরা তখন এভাবে দোয়া করেছেন। তাই এভাবে দোয়া করার এক বিশাল সুযোগ আমাদেরো আছে। অন্যভাবে বলা যায় হজের সফরের দোয়া কবুলের অবারিত সুযোগ রয়েছে, সুতরাং সে সব জায়গায় অত্যান্ত মনোযোগের সঙ্গে দোয়া করা দরকার।
তাই আমি আজ মক্কা-মদিনার এমন কয়েকটি স্থান ও কালের কথা তুলে ধরছি যেখানে দোয়া কবুলের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। আপনি আপনার ভাষায় যত চাওয়া-পাওয়া আছে তা আপনার মালিকের কাছে তুলে ধরুন। আপনি আপনার যত গুনাহ খাতা আছে তা আপনি আপনার মালিক কে আপনার ভাষায় আপনার মত করে বলতে বলতে পারেন।
যেভাবে ইচ্ছে আপনি সে ভাবেই আল্লাহ পাকের কাছে চাইতে পারেন। তবে মহান আল্লাহ 99 টি গুণবাচক বিভিন্ন নামের উছিলার সাহায্য নিয়েও আপনি আল্লাহ কাছে চাইতে পারেন। আপনি আপনার দোয়া কবুলের জন্য রহমান রহিম নামটি বেশি বেশি উচ্চারণ করতে পারেন। কারণ আল্লাহ পাকের রহমান রাহিম নামের গুণাবলী কারনেও আপনার দোয়াটি কবুল হতে পারে। এজন্য আপনার দোয়া আল্লাহ পাকের দরবারে খুব দ্রুত কবুল হওয়ার একটি সুযোগ তৈরি হবে।
কোন কোন দোয়া পড়লে মনের আসা কবুল হয়
যে স্থানগুলোতে আপনি সুন্দর ভাবে দোয়া করলে আল্লাহ পাক অবশ্যই আপনার দোয়া কবুল করবে। সেই স্থান গুলোর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে আল্লাহর বাইতুল্লাহ আর এই বাইতুল্লাহ দেখে দেখে দোয়া করা। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের একেবারে কাছে গিয়ে দোয়া করার সমতুল্য বায়তুল্লাহ শরীফ দেখামাত্র দোয়া করা। বর্ণিত আছে বাইতুল্লাহ শরীফ প্রথম নজরে আসার পরে যে দোয়া করা হবে তা কবুল হয়ে যাবে সুবহানাল্লাহ।
দোয়া কবুলের দ্বিতীয় স্থান হচ্ছে মুলতাজাম, এটি দোয়া কবুলের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর থেকে কাবা শরীফের দরজা পর্যন্ত জায়গাটুকু কে মুলতাজাম বলে। সুতরাং এখানে যদি আপনি আল্লাহপাকের কাছে খাস দিলে দোয়া করেন তবে দোয়া কবুল হবে।
আরও দেখুন..
- দেনমোহর থেকে স্বামীকে ক্ষমা করার ব্যাপারে ইসলামের বিধান
- অক্সিজেন ব্যতীত একটি মানুষ ২৩ মিনিটের বেশি বেঁচে থাকতে পারবে না
- আরবের জয়তুন বরকতময় গাছ
দোয়া কবুলের তৃতীয় স্থান হচ্ছে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের দোয়া করা। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে দোয়া আল্লাহর নিদর্শন গুলোর মধ্যে অন্যতম। এ পাহাড় হাজীদের জন্য আজিম, এবং উভয়পাড়ে দোয়া করা ও দোয়া কবুল হওয়ার জন্য এটি অন্যতম স্থান। কারণ দুটি পাহাড়ি হযরত ইব্রাহিম আলাই সালাম এর স্ত্রী ও তার অন্যতম প্রিয় সন্তান আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামের পূর্বপুরুষ হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে মরুভূমিতে পানির জন্য দৌড়াদৌড়ি করেছিলেন।
দোয়া কবুল হওয়ার আলামত
আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন কবুল করে নিয়েছেন হজের মধ্যখানে প্রত্যেকটি হাজিরর জন্য দোয়া ওয়াজিব করে দিয়েছেন। সুতরাং এখানে হাজীরা দোয়া চাইবেন ইনশাআল্লাহ আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আপনার মনের আশা পূরণ করবেন। আরাফার মাঠে আরাফার দিবসের মূল অবস্থান ও মনের ইচ্ছা হচ্ছে দোয়া। এই দিনে দোয়া-মুনাজাতের গুরুত্ব অপরিসীম জোহরের প্রথম ওয়াক্তের মধ্যে একত্রে আদায় করে নিবেন। কোন সুন্নত বা নফল নামাজ আদায় না করে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দোয়া মোনাজাত কান্নাকাটিতে ব্যস্ত থাকবেন।
দুহাতুলে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের দরবারে মনের সকল আকুতি-মিনতি উজাড় করে দেন মাওলাকে খুলে বলুন। আপনি কি চান আর কি করেছেন কি জন্য লজ্জিত কার জন্য কি দরকার ইনশাআল্লাহ আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আপনার দোয়া কবুল করব। হাদীসে এসেছে উত্তম দোয়া কবুলের সময় আরাফার দিবসের দিন। দোয়া এবং উত্তম কথা যা আমি এবং আমার আগের নবীরা বলেছেন তা হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই তিনি এক তার কোন শরীক নেই রাজত্ব তাঁরই প্রশংসা।
কিভাবে বুঝবেন দোয়া কবুল হয়েছে
সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান সুবহানাল্লাহ আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন। রাসূল সাঃবলা হয়েছে দোয়া কবুলের উত্তম দিন হচ্ছে আরাফা দিবসের দিন। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আল্লাহর ঘর রাসূলে পাকের রওজা জিয়ারত করুন। আমাদের প্রত্যেক হাজী ভাইকে আরাফার ময়দানে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের দরবারে মনের সকল ইচ্ছা পেশ করার সুযোগ দান করে।
আমীন 590 মুজদালিফায় দোয়া করা মুজদালিফায় অবস্থান কালে দোয়া করতে হবে আল্লাহ তা’আলা বলেন তোমরা যখন আরাফা থেকে প্রত্যাবর্তন করবে যখন তোমাদের মনের সকল ইচ্ছা আমাকে জানাও সুবহানাল্লাহ। মোশারুল হারামের কাছে পৌঁছে আল্লাহকে স্মরণ করবে সূরা বাকারা আয়াত 198 হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে উপস্থিত হতেন।
সেখানে তিনি অবস্থান করতেন। ঐ স্থানটি বর্তমানে মসজিদুল হারাম মসজিদের সম্মুখভাগে অবস্থিত একেবারে আকাশ পরিষ্কার হওয়া পর্যন্ত দোয়া ও মুনাজাত মশগুল থাকতে হয়। মূলত এটি হলো মৌলিক আমল পাথর নিক্ষেপের পর দোয়া করা। দোয়া কবুলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সময় হচ্ছে জামারায় পাথর নিক্ষেপ করে দোয়া করা।
তিন সময় দোয়া কবুল হয়
পাথর নিক্ষেপের পর ঐ স্থান থেকে সরে গিয়ে প্রাণ খুলে দোয়া করা হচ্ছে বিদায়ী তাওয়াফ শেষে দোয়া করা। হজের সব কর্ম পালন শেষ করে দেশে ফেরার আগেই বিদায়ী তাওয়াফ করতে হবে। বিদায়ী তাওয়াফ শেষে আপনি মুনাজাতে আল্লাহর কাছে যা চাইবেন আল্লাহ তাকে কবুল করবেন।
মুলতাজাম এ চেহারা বুক দুই বাহু ও দুই হাত রেখে দোয়া করবেন এটাই আপনার শেষ সুযোগ কাজে লাগান। আল্লাহর কাছে যা খুশি আপনি চাইতে পারেন আরেকটি হচ্ছে জমজমের পানি পান করার সময় দোয়া করা। জমজমের পানি পান করার সময় আপনার যা খুশি আল্লাহর কাছে চাইবেন।
এখানে আপনি যা দোয়া করবেন আল্লাহ তা’আলা তাই কবুল করবেন। দোয়া করার সময় বেশি বেশি কান্নাকাটি করার চেষ্টা করতে হব। আল্লাহর কাছে মনোযোগী হয়ে দোয়া করতে হবে কারণ অন্যমনস্ক হয়ে দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন না।
আপনি আসমান-জমিনের সৃষ্টিকর্তা আপনার নিজের রিযিকদাতা, পালনকর্ত্ রক্ষাকারী আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট দাঁড়িয়ে আছেন আর আপনার মনোযোগ অন্য কোথায় একটু বেয়াদবি শামিল দেখায়, কোন প্রকার বাড়াবাড়ি করা যাবে না। আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখে দোয়া করা খুবই জরুরি।
দোয়া কবুল হওয়ার সময়
আল্লাহ অবশ্যই আমাদের কথা শুনছেন এবং আমার দোয়া কবুল করছেন অন্তরিন্দ্রিয় বিশ্বাস রাখবেন কখনো হতাশ হবেন না। এছাড়া তাওয়াফের স্থানে কাবা ঘরের ভিতরে মাকামে ইব্রাহীম এর পেছনে মিনার মসজিদের হয়েছে হাযরে আসওয়াদ ও রুক্মিণীর মধ্যবর্তী স্থানে হাতিমের এলাকার মধ্যে মিজাবে রহমত এর নিচে।
যেখানে চাঁদের পানি পড়ে মাকামে ইব্রাহিম এর পেছনে বেশি বেশি দোয়া করবেন আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমরা যারা এখনো পবিত্র কাবা এগিয়ে হজ পালন করতে পারেনি।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর রওজা মোবারক এ যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন যেন আমাদেরকে সেই স্থানে যাওয়ার তৌফিক দান করেন। আরেকটি বিষয় বলে রাখতে চাই আর তা হচ্ছে. রহমত থেকে কখনোই নিরাশ হওয়া যাবে না।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাদের সান্ত্বনা দেন তোমরা কেউ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না সুতরাং দোয়া কবুলের স্থানগুলোতে গিয়ে মন থেকে দিন থেকে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের কাছে আমরা দোয়া করব।
দোয়া কবুল না হলে করনীয়
যেন আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের দোয়া কবুল করেন এবং অন্তরের দৃশ্য-শ্রাব্য আল্লাহ আমার দোয়া অবশ্যই কবুল করবেন হোক আমি যত বড় গুনাহগার হই। কেননা আল্লাহ পাক তাঁর পবিত্র কালামে পাকে বলেছেন আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না।
সুতরাং আমি যদি কাফের না হয়ে থাকি আমি যদি এক আল্লাহ বিশ্বাসী হই তাহলে অবশ্যই আমাকে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে কোনো পরিস্থিতিতেই আমার বিশ্বাস হারানো ঠিক হবে না আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদেরকে একাগ্রতা এবং ঈমানের দৃঢ়তা দান করুক।
আমাদের এই পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ।